শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন
॥মোক্তার হোসেন॥ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও ভুক্তভোগী পরিবার দাবী করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দার(৪২) সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার।
পিল্টু জোয়ার্দ্দার রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কশবামাজাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পিল্টু জোয়ার্দ্দার কশবামাজাইল ইউপির সুবর্ণকোলা গ্রামের মরহুম শামসুদ্দিন জোয়ার্দ্দারের কনিষ্ঠ পুত্র। আওয়ামী লীগ রাজনীতির পাশাপাশি এলাকায় সামাজিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন পিল্টু জোয়ার্দ্দার। তিনটি মামলায় দীর্ঘ ৮মাসের বেশি সময় রাজবাড়ী জেলা কারাগারে বন্দী রয়েছেন তিনি।
খুন, ডাকাতি ও অস্ত্র তিনটি মামলার ২টিতে ইতোমধ্যে তিনি জামিন লাভ করেন। অস্ত্র মামলায় জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, একটি হত্যা মামলায় ২০২০ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর ধার্য তারিখে হাইকোর্টে জামিন শুনানীতে অংশ নিতে আগেরদিন ২২শে সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকায় যাওয়ার পথে পাংশা এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা জজ আলী বিশ্বাস ও পিল্টু জোয়ার্দ্দারসহ ৩৭জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতদের নামে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়।
ওই সময় উল্লেখিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেফতারের প্রতিবাদে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ।
ওই সাংবদিক সম্মেলনে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মাছপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান খোন্দকার সাইফুল ইসলাম (বুড়ো) এবং পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ এ.এফ.এম শফীউদ্দিন (পাতা)সহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডাঃ এ.এফ.এম শফীউদ্দিন (পাতা)
এদিকে গতকাল ১৪ই জুন সরজমিন তথ্যানুসন্ধ্যানে কশবামাজাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও কশবামাজাইল ইউপির ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল হান্নান এবং কারাবন্দী আওয়ামী লীগ নেতা মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দারের ভাস্তে মেহেদী হাসান বলেন, মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দার কশবামাজাইল ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সামাজিক সেবা ও জনকল্যাণমুলক কাজের সাথে সম্পৃক্ত তিনি। কিন্তু এলাকার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মিথ্যা মামলায় তিনি দীর্ঘ ৮ মাসের অধিক সময় কারাবন্দী রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে জিআর-৫৩/২০, তাং-১৩/০৩/২০২০, জিআর-১২১/২০২০, তাং-২৩/০৯/২০২০ ও জিআর-১২০/২০, তাং-২৩/০৯/২০২০ দায়ের করা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলায় বিজ্ঞ উচ্চ আদালত থেকে ও ডাকাতি মামলায় রাজবাড়ীর বিজ্ঞ আদালত থেকে তার জামিন হয়েছে। অস্ত্র মামলায় বিজ্ঞ উচ্চ আদালতে জামিনের আপিলের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তার জামিল লাভ এবং নির্দোষ প্রমাণ প্রত্যাশা করেন পরিবার ও দলীয় নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের গত ২২শে সেপ্টেম্বর তারিখ দিবাগত রাত ১টার দিকে পাংশা থানা, ডিবি, ও কসবামাজাইল ক্যাম্পের পুলিশের যৌথ অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জজ আলী বিশ্বাস এবং তার দুই পুত্র মতিন বিশ্বাস, বদিয়ার বিশ্বাস, জামাতা বাচ্চু মুন্সী ও মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দারসহ ৩৭জনকে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে পাংশা ডাকাতির প্রস্তুতি এবং অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
পরবর্তীতে তাদেরকে পাংশা থানায় অস্ত্র ও ডাকাতির প্রস্তুতির ২টি মামলার পাশাপাশি সূবর্নখোলা গ্রামে স্কুল শিক্ষক আসাদুল বারী খান(৪৫) হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত আসামী জজ আলী বিশ্বাসসহ বেশ কয়েকজন আসামীকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই ৩টি মামলায় জজ আলী বিশ্বাস গত ২৮শে নভেম্বর রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান। আদালতের জামিনের আদেশ ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছার পর তিনি গত ২রা নভেম্বর মুক্তি পান। কারামুক্তির পর তিনি ২দিন ঢাকায় চিকিৎসা নিয়ে গত ৪ঠা নভেম্বর রাতে তিনি নিজ বাড়ীতে ফেরেন এবং গত ৬ই নভেম্বর রাত আড়াইটার দিকে নিজ গ্রামের বাড়ীতে মারা যান।
Leave a Reply