শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন
॥স্টাফ রিপোর্টার॥ রাজবাড়ী সদর উপজেলার কল্যাণপুরে গতকাল ৪ঠা আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোবাইলে ডেকে নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে শাহিন খান(৩০) নামে এক যুবকের কুনই থেকে দুই হাত ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কেটে ছিন্ন করে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
আহত শাহিন খান একই গ্রামের হাসেম খানের ছেলে। ঘটনার পর গুরুতর অবস্থায় আহত শাহিন খানকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের পর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখান থেকে সন্ধ্যার পূর্বে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে পরিবারের লোকজন।
শাহিনের বড় ভাই হোসেন খান জানান, আমার ভাই শাহীন একজন খামারী। নিজ বাড়ীতে হাঁস ও গরুর খামার করে সে জীবিকা নির্বাহ করে। সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এলাকার চিহ্নিত কিছু মাদক কারবারী আমার ভাই শাহিনের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। গতকাল ৪ঠা আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে বাড়ী থেকে একই গ্রামের ইসমাইল আমার ভাই শাহিনকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে কল্যাণপুর দাখিল মাদ্রাসা এলাকা নিয়ে যায়। সেখানে ডেকে নেয়ার পর মাদ্রাসার সামনে ফাঁকা জায়গায় ইসমাইল, ইদ্রিস, শাহ আলম, শাহিন ও লালুসহ আরো কয়েকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমার ভাইয়ের কুনই থেকে দুই হাত কেটে ছিন্ন করে ফেলে এবং বাম পায়ের গোড়ালীর রগ কেটে দেওয়াসহ কুপিয়ে থেতলে রেখে পালিয়ে যায়। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখান থেকে সন্ধ্যার পূর্বে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
অভিযুক্ত ইসমাইলের মা জানান, আমার ছেলে ইসমাইল ও শাহিন দুই বন্ধু। গত ২৪শে জুন শাহিন আমার ছেলে ইসমাইলকে তার শ^শুর বাড়ীতে ডেকে যায়। সেখানে শাহিন তার স্ত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্কের অভিযোগ এনে আমার ছেলে ইসমাইলকে মারপিট করে ছিলো। তবে আজকে কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটা আমরা বলতে পারবো না।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাহিনের দুই স্ত্রী রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর সাথে ইসমাইলের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে গত জুন মাসে শাহিন মোটর সাইকেলযোগে ইসমাইলকে তার নিজবাড়ী থেকে উঠিয়ে নিয়ে খানখানাপুর ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে শ^শুর বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে শাহিন বেদমভাবে ইসমাইলকে মারপিট করে। এছাড়াও শাহিন, ইসমাইল ও অন্যান্যরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। ইসমাইল ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী থানায় মাদক মামলা রয়েছে। তেমনি শাহিনের বিরুদ্ধেও রাজবাড়ী থানায় অস্ত্র মামলা আছে। মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেন কিংবা পূর্ব শত্রুতার জেরে ইসমাইল তার সহযোগিদের নিয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর) মোঃ ফজলুল করিম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মাদক সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে। ঘটনার পর থেকে জড়িতরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের কয়েকটি টিম অভিযান চালাচ্ছে। এ খবর লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
Leave a Reply