মঙ্গলবার, ২৯ Jul ২০২৫, ১২:১১ অপরাহ্ন
॥হেলাল মাহমুদ॥ করোনা পরিস্থিতির কারণে ভালো নেই রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর যৌনকর্মীরা। করোনার শুরুতে লকডাউন করা হলে পতিতাপল্লীতে খরিদ্দারদের আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ৪মাসের লকডাউন শেষে পতিতাপল্লী উন্মুক্ত করে দেয়া হলেও খরিদ্দারদের সংখ্যা একদম কমে যাওয়ায় যৌনকর্মীদের জীবিকার পথও অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়।
শুধু যৌনকর্মীরাই নয় পতিতাপল্লীর বাড়ীওয়ালাদের (সর্দার ও সর্দারনী) পাশাপাশি পতিতাপল্লীতে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ভালো নেই।
দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর যৌনকর্মীরা জানায়, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২০শে মার্চ থেকে পুলিশ পতিতাপল্লী লকডাউন করে বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। পতিতাপল্লীর প্রধান প্রবেশ পথ ছাড়া চারপাশের বিভিন্ন পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। এর ফলে যৌনকর্মীরাসহ পতিতাপল্লীর অন্যান্য বাসিন্দারা বিপাকে পড়ে। আয়-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা মানবেতর জীবন-যাপন করতে থাকে।
স্থানীয় প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও এনজিও’র পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় খাদ্য সহায়তা দেয়া হলেও তা ছিল অপ্রতুল। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ ছিল অনেক কম। পরে লকডাউন তুলে নেয়া হলেও আগের সেই অবস্থা আর ফিরে আসেনি।
প্রায় এক যুগ ধরে পতিতাপল্লীতে দেহ ব্যবসা করা এক যৌনকর্মী(৩৫) বলেন, জীবনে এমন কষ্ট আগে করিনি। প্রতিদিন ৪০০ টাকার রুম ভাড়া ও খাওয়াসহ প্রায় ৬০০-৭০০ টাকা প্রয়োজন। লকডাউন থাকায় খরিদ্দার আসা বন্ধ হয়ে যায়। সরকারী বা এনিজও’র সাহায্য পেলেও তাতে কয়দিন চলে?
অপ্রাপ্তবয়ষ্ক এক যৌনকর্মী (১৪) বলেন, আগে দিনে ২-৩ হাজার টাকা আয় করেছি। এখন ৫০০ টাকার বেশী হয় না। মাঝে কয়েকদিন অবস্থা আরো খারাপ হয়েছিল। মানুষজনের আনাগোনা না থাকায় সবার পরিস্থিতিই খারাপ।
যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা মুক্তি মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা বেগম বলেন, পতিতাপল্লীতে টানা ৪ মাস লকডাউন থাকায় সেখানকার বাসিন্দাদের অবস্থা খুব খারাপ। বর্তমানে লকডাউন না থাকলেও অনেকে ভয়ে আসে না। লকডাউনের সময় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় আমরা সহায়তা করেছি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে পতিতাপল্লী লকডাউন করা হয়।
লকডাউনের সময় পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান এবং রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমানের তত্ত্বাবধানে কয়েক দফায় খাদ্য সামগ্রী ও কোরবানীর ঈদে মাংস দেয়া হয়। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি শিথিল থাকায় তারা অনেকটাই স্বাভাবিক আছেন।
Leave a Reply