শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ অপরাহ্ন
॥আশিকুর রহমান॥ রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মেঘনা মোল্লাপাড়া গ্রামে ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে খোরশেদ মোল্লা ওরফে খোরশেদ ডাক্তার(৬৫) নামে এক গ্রাম্য চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
এ অভিযোগে গত ৩০শে মে নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা বাদী হয়ে খোরশেদ ডাক্তারের বিরুদ্ধে পাংশা থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে মামলা দায়েরের ১৫দিনেও আসামী গ্রেফতার হয়নি।
শিশুটির মায়ের অভিযোগ, খোরশেদ ডাক্তার ও তার ছেলেরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
খোরশেদ ডাক্তার মেঘনা মোল্লাপাড়া গ্রামের মৃত তৈছা মোল্লার ছেলে। মেঘনা বাজারে তার ওষুধের দোকান রয়েছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটি স্থানীয় একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
শিশুটির মা বলেন, ‘খোরশেদ ডাক্তার আমাদের প্রতিবেশী। আমার স্বামী তার বাড়ীতে দিন মজুরের কাজ করেন। গত ১০ই মে দুপুর ২টার দিকে আমার মেয়ে খোরশেদ ডাক্তারের পুকুর চালায় খেলা করছিলো। এ সময় খোরশেদ আমার মেয়েকে তার ক্ষেত থেকে ভুট্টা তোলার কথা বলে ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে সে আমার মেয়ের মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর খোরশেদ আমার মেয়েকে ছেড়ে দিলে মেয়ে কান্না করতে করতে বাড়ীতে আসে। আমি কান্নার কারণ জানতে চাইলে সে আমাকে ঘটনা খুলে বলে। তখন আমি আমার মেয়ের পরনের প্যান্ট খুলে দেখি তার যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমি আমার স্বামীকে জানাই। খোরশেদ প্রভাবশালী হওয়ায় এবং আমার স্বামী তার বাড়ীতে দিন মজুরের কাজ করায় সবদিক বিবেচনা করে আমি ও আমার স্বামী আমার মেয়েকে গোপনে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করাই। কিন্তু এতে আমার মেয়ের যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্ত বের হওয়া বন্ধ না হওয়ায় গত ৩০শে মে আমরা তাকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসক আমার মেয়েকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে রেফার করেন। পরে ওইদিনই আমি বাদী হয়ে খোরশেদ ডাক্তারের বিরুদ্ধে পাংশা থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করি।’
শিশুটির মা আরও বলেন, ‘মামলা দায়েরের ১৫দিনেও আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। এখন খোরশেদ ডাক্তার ও তার ছেলেরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তারা আমার বাড়ীঘর পুড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। আমি খুব আতংকে দিনযাপন করছি। আমার দাবী লম্পট খোরশেদকে গ্রেফতার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।’
পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মেঘনা মোল্লাপাড়া গ্রামে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামী খোরশেদ মোল্লা পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
শিশুটির পরিবারকে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘কেউ যদি ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি দিয়ে থাকে তাহলে তারা থানায় এসে জিডি করুক। আমরা অবশ্যই আইনগতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।’
Leave a Reply