বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
সাপ্তাহিক সাহসী সময়ের ২৬তম বর্ষে পদার্পনে সকলকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন ৫৩তম মহান বিজয় দিবস আজ নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে খেজুরের কাঁচা রস পান না করার জন্য আহবান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মসূচি রাজবাড়ীতে হারানো ৩৫টি মোবাইল উদ্ধার করে মালিকদের কাছে হস্তান্তর করল পুলিশ রাজবাড়ীতে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি কালুখালী উপজেলার হোগলাডাঙ্গী মাদ্রাসা থেকে দাখিল-আলিম পরীক্ষার কেন্দ্র স্থানান্তরে ১১টি মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম অনিশ্চয়তার পথে গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলায় ভ্যান উল্টে গভীর গর্তে পড়ে মসলা বিক্রেতা নিহত রাজবাড়ীতে সাহিত্যে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন ডিজিটাল যোগাযোগ ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের উদীয়মান ক্ষেত্র ঃ ভার্মা
৭ মার্চ কেন জাতীয় দিবস নয় : হাইকোর্ট

৭ মার্চ কেন জাতীয় দিবস নয় : হাইকোর্ট

ফাইল ছবি

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল জনসমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী ভাষণের স্মারক হিসেবে দিনটি অবিস্মরণীয় হয়ে আছে।

ঐতিহাসিক ওই দিনটিকে কেন জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হবে না ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে সেদিন বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে কেন তার ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, অর্থ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, শিক্ষা সচিব, গণপূর্ত সচিব, সংস্কৃতি সচিবকে উক্ত রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ রুল জারি করেছেন আদালত।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে আইনজীবী ড. বশীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অবন্তী নূরুল।

আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ মার্চ ভাষণ দিয়েছিলেন, মঞ্চটি পুনর্নির্মাণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে কেন ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

রুলে বলা হয়েছে একাত্তরের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্থানে ও যে মঞ্চে ভাষণ দিয়েছিলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধীকে যেস্থানে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল, সে স্থানে কেন মঞ্চ পুনর্নির্মাণ করা হবে না।

একই সঙ্গে ৭ মার্চ তর্জনি উঁচিয়ে স্বাধীনতায় উদ্বুদ্ধকরণে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ভাস্কর্য ওই মঞ্চে কেন করা হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

আগামী ১২ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন এ রুলের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা জানিয়ে আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বলা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদ ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা ও যে মঞ্চে বঙ্গবন্ধু এ ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই মঞ্চে তার আবক্ষ ভাস্কর্য নির্মাণের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করেন।
আদালতের শুনানিতে বশির আহমেদ বলেন, ‘১৯৫টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুপ্রিম কোর্ট দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে বিভিন্ন আদেশ দিয়েছেন। এ কারণে আমি এ রিট দায়ের করেছি’।

‘বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ যে স্থনে ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে মঞ্চ নির্মাণ করতে হবে’। তখন আদালত বলেন, ‘বললে তো অনেক কথা চলে আসে। যে মঞ্চটায় বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছিলেন কিংবা যে জায়গায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পন করেছিল, বা আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র সমর্পন করেছিলেন, যেখানে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল, সে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো যেন না থাকতে পারে সেজন্য সেখানে করা হল শিশুপার্ক।’

এ সময় আইনজীবী বশির আহমেদ বলেন, ‘আগ্রার তাজমহল সংরক্ষণের বিষয়ে তদারকি করতে ছুটির দিনে দেশটির ফুলকোর্ট বসে আদেশ দিয়েছিলেন। আমাদের বিষয়েও আদেশ হতে পারে। এ বিষয়ে একটি প্রকল্প নেয়া যেতে পারে।’

এরপর আদালত বলেন, ‘ভারতে তো অফিসিয়াল সম্বোধন আছে, ‘জয় হিন্দ’। আমাদের এখানে কোনো সম্বোধনই তো নাই। আমাদের এখানে ছিল ‘জয় বাংলা’। এখন ‘জয় বাংলা’ বললে মনে করে রাজনীতিবিদ। ওয়ান পার্টি স্লোগান।’

সাড়ে চার দশক আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, সেই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৭ কোটি বাঙালিকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তার ওই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে নামলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আত্মসমর্পণের দলিলে সই করে। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রামাণ্য দলিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করেছে ইউনেস্কো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved  2022 sahasisamoy
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!