সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
সাপ্তাহিক সাহসী সময়ের ২৬তম বর্ষে পদার্পনে সকলকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন ৫৩তম মহান বিজয় দিবস আজ নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে খেজুরের কাঁচা রস পান না করার জন্য আহবান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মসূচি রাজবাড়ীতে হারানো ৩৫টি মোবাইল উদ্ধার করে মালিকদের কাছে হস্তান্তর করল পুলিশ রাজবাড়ীতে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি কালুখালী উপজেলার হোগলাডাঙ্গী মাদ্রাসা থেকে দাখিল-আলিম পরীক্ষার কেন্দ্র স্থানান্তরে ১১টি মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম অনিশ্চয়তার পথে গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলায় ভ্যান উল্টে গভীর গর্তে পড়ে মসলা বিক্রেতা নিহত রাজবাড়ীতে সাহিত্যে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন ডিজিটাল যোগাযোগ ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের উদীয়মান ক্ষেত্র ঃ ভার্মা
উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল নক্ষত্র রূপে আবির্ভূত

উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল নক্ষত্র রূপে আবির্ভূত

॥স্টাফ রিপোর্টার॥ উত্তর আয়ারল্যান্ড লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য মার্টিন-ও-মোয়েলার উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশের সাফল্য অভাবনীয় উল্লেখ করে বলেছেন, উন্নয়নের স্বর্ণযুগের চলমান প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সাথে থাকবে উত্তর আয়ারল্যান্ড।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টাডি সার্কেল আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ঃ এ গোল্ডেন জার্নি টু ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানা গেছে। খবর বাসস।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শুধু তাদের জীবনই বাঁচায়নি, মানবতার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
গত বৃহস্পতিবার উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট অ্যাসেম্বলির স্টরমনট বিল্ডিংয়ের লং গ্যালারিতে উত্তর আয়ারল্যান্ড লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য মার্টিন-ও-মোয়েলার, ক্রিস লিটল, মাইক নেসবিট এবং স্টাডি সার্কেলের চেয়ারপার্সন সৈয়দ মোজাম্মেল আলীর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অনুষ্ঠিত হয় স্টাডি সার্কেলের এই সেমিনার।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, প্যানেল স্পিকার ছিলেন লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার জুলকার নাইন, নর্দান আয়ারল্যান্ড লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য মার্টিন-মার্টিন-ও-মোয়েলার, সাবেক বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ ও জিম ওয়েলস এমএলএ।
তিন পর্বে বিভক্ত অনুষ্ঠানের প্রথম পরিচয় পর্বের পরেই দ্বিতীয় পর্বে ছিল বাংলাদেশের উন্নয়নের বিগত ১০ বছরের সাফল্য নিয়ে আলোচনা। এতে প্রাধান্য পায় স্টাডি সার্কেলের পরিচিতি, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জেন্ডার সমতা, রোহিঙ্গা সমস্যা, আইন ও বিচার ব্যবস্থা, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য খাতসহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসমূহ।
স্টাডি সার্কেলের চেয়ারপার্সন সৈয়দ মোজাম্মেল আলীর পরিচালনায় আলোচনার শুরুতে নর্দান আয়ারল্যান্ড লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য জিম ওয়েলস এমএলএ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলদেশ এখন বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল নক্ষত্র রূপে আবির্ভূত। বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং যাত্রা সম্পর্কে আমাদের জানার অনেক কিছু রয়েছে। এমন আয়োজন বাংলাদেশকে জানতে এবং পরিচয় করিয়ে দিতে আরও সহায়ক হবে।
স্টাডি সার্কেলের গবেষক সাজিয়া স্নিগ্ধা নারীর ক্ষমতায়ণ ও জেন্ডার সমতায় বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরার পাশাপাশি নারীর সামর্থ্য উন্নীতকরণ, নারীর অর্থনৈতিক প্রাপ্তি বৃদ্ধিকরণ, নারীর মতপ্রকাশ ও মতপ্রকাশের মাধ্যম সম্প্রসারণ এবং নারী উন্নয়নে পরিবেশ সৃষ্টিকরণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ সরকার এবং সরকার প্রধান শেখ হাসিনার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসমূহ তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন আত্মবিশ্বাসী একটি জাতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যেমন বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তেমনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাঙ্গালি জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছেন। ‘সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’র অনেকগুলো লক্ষ্য অর্জনের সাথে-সাথে অতি দরিদ্র অবস্থা থেকে অর্থনীতিকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে কাজ করেছে। দারিদ্র্যমুক্ত, বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত ‘রূপকল্প- ২০২১’ অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে।
ডেপুটি হাইকমিশনার মুহাম্মদ জুলকার নাইন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন। সুপ্রীম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে আইনের সুশাসনে বর্তমান বিচার ব্যবস্থার যুগান্তকারী কাজের কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. শাম্মী আহমেদ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় বলেন, মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ ভয়ার্ত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে মানবিকতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলের সৈকতে যারা পালিয়ে এসেছিলো তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই ছিল শিশু। তাদের খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, বাসস্থানের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধার সুব্যবস্থা বাংলাদেশ করেছে। পাহাড়ি বনভূমি উন্মুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ আশ্রয় শিবির। কিন্তু রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ বাসভূমিতে ফিরে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও চাপ দেয়াকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নানান আলাপ-আলোচনা হচ্ছে কিন্তু উদ্যোগের ব্যপারে আন্তর্জাতিক মহলকে আরও সচেষ্ট হওয়ার আহবান জানান তিনি।
এছাড়াও সৈয়দ মোজাম্মেল আলী গত ১০বছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, জিডিপি গ্রোথ, বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেয়া, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সাফল্য ২০হাজার মেগাওয়াট, সাড়ে তের হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুসহ মেগা প্রজেক্ট, যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভুত উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বর্তমান সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, বিশ্বের থিঙ্কট্যাঙ্কদের কাছে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল প্রশ্ন উত্তর সেশন। এ সময় উপস্থিত অতিথিবৃন্দ বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য সম্পর্কে প্যনেল স্পিকারদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। যার মাঝে উল্লেখযোগ্য ব্রেক্সিট পরবর্তী নর্থান আয়ারল্যান্ড এর অবস্থা, এমডিজি সফলতায় বাংলাদেশ, বাংলাদেশের এসডিজি প্ল্যানিং, রোহিঙ্গা সংকটে আন্তর্জাতিক মহলের তৎপরতা ও স্টাডি সার্কেলের কাজের পরিধি ইত্যাদি। পরিশেষে জামাল খান, সেলিম খান, আলা উদ্দিনের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের শেষে সকলের হাতে বাংলাদেশের বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাঁটের তৈরি ব্যাগে স্টাডি সার্কেলের প্রকাশনা ‘বাংলাদেশ এ গোল্ডেন জার্নি টু ডেভেলপমেন্ট’, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ইংরেজি ভার্সন এবং স্টাডি সার্কেলের সুভেনিওর প্রদান করা হয়। সেমিনারে নর্দান আয়ারল্যান্ড এসেম্বলির মেম্বারসহ ব্রিটিশ-বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, উন্নয়নকর্মী, কূটনীতিকবৃন্দ, উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং লন্ডন কমিউনিটির ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং দাতব্য ও স্বেচ্ছাসেবী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved  2022 sahasisamoy
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!