শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
॥মইনুল হক মৃধা॥ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলাধীন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কোর্ট চত্বর এলাকায় বিআইডব্লিউটিসি’র স্থাপিত ওয়ে স্কেল (ওজন নিয়ন্ত্রক যন্ত্র) গত ২৯শে আগস্ট থেকে বিকল হয়ে রয়েছে।
এর ফলে ওজন স্লিপ নিতে আসা পণ্যবাহী যানবাহনের মালের চালান রশিদের সাথে ওজন স্লিপ হাতে লিখে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশী সময় লাগছে। যানবাহনের বাড়তি চাপ সামাল দিয়ে উঠতে না পারায় স্কেল এলাকায় যানজট তৈরী হচ্ছে। যানজটের কারণে পাশেই থাকা গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যানবাহনগুলো দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। এর পাশাপাশি ব্যস্ততম মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার পরিবহনগুলো দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। আবার স্কেল থেকে স্লিপ নিয়ে ৬ কিলোমিটার পরই দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে ফের পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে আরেক দফা লম্বা সিরিয়ালে আটকে থাকতে হচ্ছে। ফলে যানরবাহনগুলোর চালক-শ্রমিকদের বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, পণ্যবাহী যানবাহনের ওজন পরিমাপের জন্য স্থাপিত ডিজিটাল ওয়ে স্কেলটিতে মাঝে-মধ্যেই নানা ধরনের ত্রুটির কারণে সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া স্কেলটির দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কও ভাঙ্গাচোড়া। এ অবস্থায় গত ২৯শে আগস্ট থেকে ওয়ে স্কেলটি বিকল হয়ে পড়ায় সংশ্লিষ্টদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল ৫ই সেপ্টেম্বর দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কেলের বিপরীত পাশে মহাসড়ক জুড়ে পাশাপাশি দু’টি গাড়ীর আসা-যাওয়ায় অনেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া অ্যাপ্রোচ সড়ক ভাঙ্গাচোড়া ও খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় ওজন স্লিপ নিতে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অনেকটা জায়গা ঘুরে স্কেলে উঠতে হয়। এসব কারণে মহাসড়কে আটকে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে কোন কোন সময় স্কেল থেকে মহাসড়কের ২-৩ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট হচ্ছে। যানজটের কারণে গোয়ালন্দ রেলগেটে দুর্ঘটনার ঝুঁকির পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রবেশের একমাত্র রাস্তাটিও সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় জরুরী কোন রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলে সমস্যায় পড়তে হয়। ট্রাকের ওজন স্লিপ দিতে বিলম্ব হলে মহাসড়কের অর্ধেকটা জুড়ে একপাশে ট্রাকের লম্বা লাইন, বাকি অর্ধেকটায় গাড়ী মুখোমুখি হওয়ায় সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় বাস-ট্রাকগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়।
স্কেলের দুই পাশে ঢাকা-খুলনাগামী যানবাহনগুলোর ২/৩ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ওয়ে স্কেলের কারণে সবাইকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা হলে তারা ওয়ে স্কেলটি অন্যত্র স্থাপনের দাবী জানিয়ে বলেন, স্কেলটির কারণে প্রায় প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত, এমনকি রাতেও দীর্ঘ যানজট তৈরী হচ্ছে। এর ফলে দৌলতদিয়া ঘাটের মতোই চিত্র এখানেও লক্ষ্য করা যায়। যানজটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রবেশ পথটিও পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোঃ শিহাব উদ্দিন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে ওয়ে স্কেলটিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ডিজিটাল সিস্টেমে স্লিপ দেয়া যাচ্ছে না, হাতে লিখে প্রত্যেকটি ট্রাকের ওজনের স্লিপ দেয়া হচ্ছে। যার কারণে সময় বেশী লাগছে। এর পাশাপাশি গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে রাখা ট্রাকগুলো পুলিশ একযোগে ছেড়ে দিলে ওয়ে স্কেল এলাকায় সাময়িকভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়। তা স্বত্ত্বেও স্কেলটি অন্যত্র স্থাপনের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
Leave a Reply