বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১০ অপরাহ্ন
॥স্টাফ রিপোর্টার॥ পাংশা শহরের প্রধান বাজারে(কাঁচা বাজার ও মাছ বাজার সংলগ্ন) প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের রাজবাড়ী জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমি পরস্পর যোগসাজসে প্রভাবশালী ব্যক্তির নামে মিউটিশন/নামজারীর পাঁয়তারার ঘটনায় তোলপাড় চলছে।
বিষয়টি জানতে পেরে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মানিকহার রহমান গত ২৬শে জানুয়ারী উক্ত সরকারী জমির মিউটিশন/নামজারী বন্ধ রাখার জন্য পাংশা উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি)কে পত্র প্রদান করেন। উক্ত পত্রের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) ও পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রদান করেছেন।
গত ২৬শে জানুয়ারী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মানিকহার রহমানের স্বাক্ষরিত ৪৬.৩০.৮২০০.০০১.০৯.০১৪.১৮-২৩(৫) নং স্মারকের পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জেলা পরিষদের মালিকানাধীন পাংশা উপজেলার ১৯১ নং নারায়ণপুর মৌজার এস এ ০৫ নং খতিয়ানের ৩২৩ নং দাগে ১.০৯ একর জমি গত ২০/০২/২০১৮ তারিখে পাংশা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ নোওয়াব আলী রাজা, পাংশা পৌরসভার সার্ভেয়ার নজরুল ইসলাম জিন্নাহ ও জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার কর্তৃক পরিমাপ করে সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়। পরিমাপের সময় জেলা পরিষদের সদস্য, পাংশা পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) উপস্থিত ছিলেন। উক্ত জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জমির ভিতর যে সকল স্থাপনা রয়েছে তা উচ্ছেদের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে ১২/০৩/২০১৮ তারিখে ৪৬.৩০.৮২০০.০০১.০৩.০০৬.১৬-৬৪ নং স্মারকে পত্র প্রদান করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) কর্তৃক ২০/০৩/২০১৮ তারিখে ০৫.৩০.৮২০০.০২০.২৭.০০৭.১২-৪০৯ নং স্মারকে সরকারী ভূমির অবৈধ দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য পত্র প্রদান করা হয়। উত্ত পত্রের আলোকে মহামান্য হাইকোর্টে ৪৯২৯/২০১৮ ও ৫১৪৮/২০১৮ নং রিট পিটিশন দাখিল করা হয়, তা বিচারাধীন। বর্ণিত জমি জেলা পরিষদের স্বত্ত্ব দখলীয়। পাংশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াদুদ মন্ডল কর্তৃক যে জমির মিউটিশন/নামজারী করার আবেদন করেছেন তার মধ্যে উপরে বর্ণিত দাগের জমির মধ্যে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। তার জেলা পরিষদ, পাংশা উপজেলা ভূমি অফিস ও পাংশা পৌরসভা কর্তৃক বর্ণিত তারিখে পরিমাপ করে যে সীমানা পিলার দেওয়া হয় তার ভিতরে অবস্থিত দোকান ঘরের মিউটিশন/নামজারী বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।’
অপরদিকে রাজবাড়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার পাংশা উপজেলার নারায়ণপুর মৌজার কয়েকটি দাগের জমির ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্যাডে অফিস স্মারক ও তারিখ বিহীন একটি প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেছেন। উক্ত প্রত্যয়নপত্র মিউটিশন/নামজারীর জন্য এসিল্যান্ড অফিসে দাখিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
উক্ত প্রত্যয়নে উল্লেখ করা হয়, ‘এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাইতেছে যে, উপজেলা-পাংশা, মৌজা-নারায়ণপুর, জে.এল নং-২০৩, সিট নং-৮, জেলা-রাজবাড়ী, রেঃ সাঃ নং-১১৫, ১১৬, স্কেল ৬র্র্র্৪র্ = ১মাইল। বি.এস. ৮৩৭ নং খতিয়ানভুক্ত দাগ নং-১৮০০, ১৮০২, ১৮০৩, বি.এস. দাগসমূহের মধ্যে আমার জেলা পরিষদের কোন সম্পত্তি বা অধিগ্রহণকৃত জমি নাই। বি.এস. খতিয়ান ৮৩৭, বি.এস. দাগ নং-১৮০০, ১৮০২, ১৮০৩। ইহা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সম্পত্তি। এই সম্পত্তিতে আমার জেলা পরিষদের অনুকূলে কোন প্রকার দাবী নাই। এই বি.এস. ৮৩৭ নং খতিয়ানভুক্ত বি.এস. দাগ নম্বর ১৮০০, ১৮০২, ১৮০৩ জমির মালিকগণ ব্যক্তিগতভাবে নিরাপদে ভোগ দখল করিতে পারিবেন।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ ব্যাপরে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করা হলে জেলা পরিষদের মূল্যবান সরকারী সম্পত্তি বেহাতে সংশ্লিষ্টদের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
Leave a Reply